পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১২

আমি গান গাইতে পারি না


গানে মিলে প্রাণের সন্ধান, সেই গান গাওয়া হলনা
আমি গান গাইতে পারি না।

জানিনা ভাব-ক্রান্তি গাইতে পারিনা সেই গান
যেই গান গাইলে মিলে আঁধারে আলোর সন্ধান
গাইলেন লালন, রাধা রমণ, হাসন রাজা দেওয়ানা
আমি গান গাইতে পারি না

বাউল মুকুন্দ দাস গেয়েছেন দেশেরই গান
বিদ্রোহী নজরুলের গানে পাইলেন মুক্তির সন্ধান
ভাবের গান গাইতে গেলে অভাবে ভাব জাগেনা
আমি গান গাইতে পারি না

আরকুম শাহ্, সিতালং ফকির বলেছেন 'মারফতি গাও'
সৈয়দ শাহ্ নূরের গানে শুকনাতে দৌড়াইলেন নাও
করিম বলে প্রাণ খুলে গাও গাইতে যাদের বাসনা
আমি গান গাইতে পারি না।


ও রে সাম্পানওয়ালা তুই আমারে করলি দেওয়ানা

ওরে সাম্পানওয়ালা তুই আমারে করলি দিওয়ানা 
তুই আমারে,তুই আমারে 
তুই আমারে করলি দিওয়ানা রে সাম্পানওয়ালা.. 

দেইখা রে তোর মুখের হাসি, 
আমার মন হইলো উদাসী 
ঘরে থাকতে,ঘরে থাকতে 
ঘরে থাকতে আমি পারিনা ও রুপসুন্দরি 
তুই আমারে করলি দিওয়ানা 
ওরে রুপ সুন্দরি তুই আমারে করলি দিওয়ানা 

আহা কি রুপ মরি মরি, 
লাগে যেন স্বর্গের পরী 
না দেখলে রুপ,না দেখলে রুপ 
না দেখলে রুপ প্রাণ তো বাঁচেনা 
ও রুপসুন্দরি তুই আমারে করলি দিওয়ানা

সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ


সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ,
আমি সুখের আশায় বইসা আসি, আমায় লইয়া যাও,
কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।

সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ,
এ পাড়েতে আধা সেনা, ও পাড়েতে মাও যাতনা গো,
হয়না আমার পাড়ে যাওয়া, ভুললাম সেই নিবিড় ছাওয়া,
রক্ত শুধু দেখিয়া যাই, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।

সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ,
দিদির আবার ওই শান্তি সেনা, আমি করি গান রচনা গো,
ভোট আসে ভোট যায় আবার, ভোটের পরেই সব পগাড় পার,
হাওয়াতে মিলিয়া যায়, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।

সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ,
বৃদ্ধ বাবুর অনেক জ্বালা, গিলছেনা কেউ কথার খেলা গো,
রানি রাজায় যুদ্ধ হয়, আমাদেরি পরান যায়,
কি করি আজ ভেবে না পাই, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।

ওলো, সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।


আমার মন-চোরারে কোথা পাই

আমার মন-চোরারে কোথা পাই
কোথা যাই মন আজ কিসে বুঝাই
নিষ্কলঙ্কে ছিলাম ঘরে
কিবা রূপ নয়নে হেরে,
মন তো আমার ধৈর্য নাই
ও সে চাঁদ বটে কি গৌর দেখে
হলাম বেহঁস থেকে থেকে
আমার মনে পড়ে তাই
বিষম রোগে আমায় দংশিলে
বিষ উঠিল বেঘ মূলে
সে বিষ গাঁটরি করা,
না যায় হরা
কি করিবে কবিরাজ গোঁসাই
মন বুঝ ধন দিতে পারে
কে আছে এই ভাব-নগরে
কার কাছে এই মন জুড়াই
যদি গুরু দয়াময়
এই অনল নিভায়,
অধীর লালন বলে, তার কি বল উপায়


নিশা লাগিল রে


নিশা লাগিল রে, নিশা লাগিল রে,
বাঁকা দুই নয়নে নিশা লাগিল রে।
হাসন রাজার পিয়ারীর প্রেমে মজিল রে।।
ছটফট করে হাসন রাজা দেখিয়া চাঁন মুখ
হাসন জানের মুখ দেখিয়া জন্মের গেল দুখ।।
হাসন জানের রূপটা দেখি ফালদি ফালদি উঠে
চিড়া বাড়া হাসন রাজার বুকের মাঝে টুটে।।


একদিন তোর হইবে মরণ

একদিন তোর হইবে মরণ
যমের দূতে আসিয়া তোমায় হাতে দিবে দড়ি
টানিয়া টানিয়া লইয়া যাবে যমেরও পুরি রে
সে সময় কোথায় রইব (তোমার) সুন্দর সুন্দর স্ত্রী
কোথায় রইব রামপাশা, কোথায় লৰণ ছিরিরে
করবায় নিরে হাছন রাজা রামপাশায় জমিদারী
করবায় নিরে কাপনা নদীর পারে ঘুরাঘুরিরে
(আর) যাইবায় নিরে হাছন রাজা রাজগঞ্জ দিয়া
করবায় নিরে হাছন রাজা দেশে দেশে বিয়ারে
ছাড় ছাড় হাছন রাজা, এ ভবের আশা
প্রাণবন্ধের চরণতলে, কর গিয়া বাসারে
গুরম্নর উপদেশ শুনিয়া হাছন রাজায় কয়
সব তেয়াগিলাম আমি, দেও পদাশ্রয় রে
হাছন রাজা একদিন তোর হইবে মরণ।


আর গেলে কি আসিবেন মোর মাহুত বন্ধুরে?


আর গেলে কি আসিবেন মোর মাহুত বন্ধুরে?
আরে হস্তি নড়ান হস্তিরে চড়ান হস্তির গলায় দড়ি
আরে ও সত্যি করিয়া বলরে মাহুত কোন বা দেশে বাড়ি?
হস্তি নড়াঁও হস্তিরে চড়াঁও হস্তিরে পায়ে বেড়ি
আমি সত্য করিয়া কইলাম নারী গৌরীপুরে বাড়ি।
তোমরা গেইলে কি আসিবেন মোর মাহুত বন্ধুরে?
আরে হস্তি নড়ান হস্তিরে চড়ান হস্তির পায়ে বেড়ি
আরে সত্য কইরা কনরে মাহুত ঘরে কয়জন নারী রে?
হস্তি নড়ান হস্তিরে চড়ান হস্তির পায়ে বেড়ি
আমি সত্য করিয়া কইলাম কন্যা বিয়া নাহি করিরে।।


মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে


মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে
মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

মায়ে বাপে কইরা বন্দী খুশিরও মাজারে
মায়ে বাপে কইরা বন্দী খুশিরও মাজারে
লালে ধলায় হইলাম বন্দী পিঞ্জিরার ভিতরে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

পিঞ্জিরায় সামাইয়া ময়নায় ছটফট ছটফট করে
পিঞ্জিরায় সামাইয়া ময়নায় ছটফট ছটফট করে
মজবুতও পিঞ্জিরা ময়নায় ভাঙ্গিতে না পারে রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

উড়িয়া যাইব সুয়া পাখি পইরা রইব কায়া
উড়িয়া যাইব সুয়া পাখি পইরা রইব কায়া
কিসের দেশ কিসের খেশ কিসের মায়া দয়া রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

হাছন রাজায় ডাকতো যখন ময়না আয় রে আয়
হাছন রাজা ডাকতো যখন ময়না আয় রে আয়
এমনও নিষ্ঠুরও ময়না আর কি ফিরা চায় রে

কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে


আমি না লইলাম আল্লাজির নাম



আমি না লইলাম আল্লাজির নাম।
না কইলাম তার কাম।
বৃথা কাজে হাছন রাজায় দিন গুয়াইলাম।।
ভবের কাজে মত্ত হইয়া দিন গেল গইয়া।
আপন কার্য না করিলাম, রহিলাম ভুলিয়া।।
নাম লইব নাম লইব করিয়া আয়ু হইল শেষ।
এখনও না করিলাম প্রাণ বন্ধের উদ্দেশ।।
আশয় বিষয় পাইয়া হাছন (তুমি) কর জমিদারি।
চিরকাল থাকিবেনি হাছনরাজা লক্ষ্মণছিরি।।
কান্দে কান্দে হাছন রাজা, কী হবে উপায়।
হাসরের দিন যখন পুছিবে খোদায়।।
ছাড় ছাড় হাছন রাজা, এই ভবের আশ।
(কেবল) এক মনে চিন্তা কর, হইতাম বন্ধের দাস।


আমার গায়ে যত দুঃখ সয়


আমার গায়ে যত দুঃখ সয়
বন্ধুয়া রে করো তোমার মনে যাহা লয়।।
নিঠুর বন্ধু রে, বলেছিলে আমার হবে
মন দিয়াছি এই ভেবে
সাক্ষী কেউ ছিলনা সেসময়।
সাক্ষী শুধু চন্দ্র-তারা,
একদিন তুমি পড়বে ধরা রে বন্ধু
ত্রিভুবনের বিচার যেদিন হয়।।
নিঠুর বন্ধু রে, দুঃখ দিয়া হিয়ার ভিতর
একদিনও না লইলে খবর
এইকি তোমার প্রেমের পরিচয় ও বন্ধুরে।
মিছামিছি আশা দিয়া
কেন বা প্রেম শিখাইলা রে বন্ধু
দূরে থাকা উচিত কি আর হয়।।
(পাষাণ বন্ধুরে) নিঠুর বন্ধুরে, বিচ্ছেদের বাজারে গিয়া
তোমার প্রেম বিকি দিয়া
করব না প্রেম আর যদি কেউ কয় ও বন্ধুরে।
উকিলের হয়েছে জানা
কেবলই চোরের কারখানা রে বন্ধু
চোরে চোরে বেয়াই আলা হয়।।


আমি তোমার নাম লইয়া কাঁন্দি


পরাণ বন্ধুরে
আমি তোমার নাম লইয়া কাঁন্দি
গগনেতে ডাকে দেয়া
আসমান হইলো আঁন্দি।
তোমার বাড়ী আমার বাড়ী
মধ্যে সরূ নদী
সেই নদীকে মনে হইলো
অকুল ও জ্বলদি রে বন্ধু
আমি তোমার নাম লইয়া কাঁন্দি।
উড়ীয়া যায়রে সুখুয়ার পংক্ষী
পইড়া রইলো ছাঁয়া
কোন পরাণে বিদেশ রইলা
ভূলি দেশের মাঁয়ারে বন্ধু
আমি তোমার নাম লইয়া কাঁন্দি।


ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে


ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে
ফাঁদ বসাইছে ফান্দি রে ভাই পুঁটি মাছো দিয়া
ওরে মাছের লোভে বোকা বগা পড়ে উড়াল দিয়া রে।।
ফান্দে পড়িয়া বগা করে টানাটুনা
ওরে আহারে কুংকুরার সুতা, হল লোহার গুনারে।।
ফান্দে পড়িয়া বগা করে হায়রে হায়
ওরে আহারে দারুন বিধি সাথী ছাইড়া যায় রে।।
আর বগা আহার করে ধল্লা নদীর পারেরে।।
উড়িয়া যায় চখুয়ার পঙ্খী বগীক বলে ঠারে
ওরে তোমার বগা বন্দী হইছে ধল্লা নদীর পারে রে।
এই কথা শুনিয়া রে বগী দুই পাখা মেলিল
ওরে ধল্লা নদীর পারে যাইয়া দরশন দিল রে।
বগাক্ দেখিয়া বগিক কান্দে রে
বগীক্ দেখিয়া বগা কান্দেরে।


রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১২

আর কতকাল ভাসবো আমি

আর কতকাল ভাসবো আমি
দুঃখের সারী গাইয়া
জনম গেল ঘাটে ঘাটে আমার
জনম গেল ঘাটে ঘাটে
ভাঙা তরী বাইয়া রে আমার
ভাঙ্গা তরী বাইয়া।।

পরের বোঝা বইয়া বইয়া
নৌকার গলুই গেছে খইয়ারে।
আমার নিজের বোঝা কে বলিবে রে।
রাখবো কোথায় যাওয়ারে আমি
রাখবো কোথায় যাওয়া।।

এই জীবনে দেখলাম নদীর
কতই ভাঙা গড়া
আমার দেহতরী ভাঙলো শুধু
না জাগিলো চড়া

আমার ভবে কেউ কি আছে
দুঃখ কবো তাহার কাছে রে
আমি রইলাম শুধু দয়াল আল্লাহ রে
আমি রইলাম শুধু দয়াল আল্লাহ
তোমার পানে চাইয়া রে
আমি তোমার পানে চাইয়া।।


মরিলে কান্দিস না আমার দায়

মরিলে কান্দিস না আমার দায় ।।
রে যাদু ধন ……মরিলে কান্দিস না আমার দায়
মরিলে কান্দিস না আমার দায়

সুরা ইয়াসীন পাঠ করিও
বসিয়া কাছায়
যাইবার কালে বাঁচি যেন
শয়তানের ধোঁকায়
রে যাদুধন……মরিলে কান্দিস না আমার দায়

বুক বান্ধিয়া কাছে বইসা গোছল করাইবা
কান্দনের বদলে মুখে কলমা পড়িবা
রে যাদু ধন …..
……মরিলে কান্দিস না আমার দায়!

কাফন পিন্দাইয়া আতর গোলাপ দিয়া গায়
তেলাওয়াতের ধ্বনি যেন ।
ঘরে শোনা যায়
রে যাদু ধন ……মরিলে কান্দিস না আমার দায়!

কাফন পড়িয়া যদি কান্দো আমার দায়
মসজিদে বসিয়া কাইন্দো আল্লা’রই দরগায়
রে যাদু ধন ……
….মরিলে কান্দিস না আমার দায়।


চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়

ও কারিগর, দয়ার সাগর, ওগো দয়াময়
চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়।

চান্নি পসর চান্নি পসর আহারে আলো
কে বেসেছে কে বেসেছে তাহারে ভালো
কে দিয়েছে নিশি রাইতে দুধের চাদর গায়
কে খেলেছে চন্দ্র খেলা ধবল ছায়ায়

এখন খেলা থেমে গেছে মুছে গেছে রং
অনেক দূরে বাজছে ঘণ্টা ঢং ঢং ঢং
এখন যাব অচিন দেশে, অচিন কোন গায়
চন্দ্রকারিগরের কাছে ধবল পঙ্খী নায়

ও কারিগর, দয়ার সাগর, ওগো দয়াময়
চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়।


শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১২

আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি


আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি ।।
নিভা ছিল মনের আগুন জ্বালাইয়া গেলি প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি…

আম ধরে থোকা থোকা তেতুল ধরে ব্যাকা…হায়রে তেতুল ধরে ব্যাকা
আমার আসবে বলে শ্যাম কালাচাঁন নাহি দিল দেখা প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি……

আমার শিয়রে শাশুড়ী ঘুমায় জলন্ত নাগিনী… হায়রে জলন্ত নাগিনী ।।
আমার পৈঠানে ননদী শুয়ে দুরন্ত ডাকিনী প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি…

আম গাছে আম ধরে জাম গাছে জাম……হায়রে জাম গাছে জাম ।।
আমি পন্থের দিকে চাইয়া থাকি
আসেনি মোর শ্যাম প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি প্রাণ কোকিলা রে

প্রাণ কোকিলা রে
বন্ধুর বাড়ী আমার বাড়ী মইধ্যে জলের বেড়া
ওরে হাত বাড়াইয়া দিছে পাঢ কপাল দেখি পোড়া

প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি


প্রেমের মরা জলে ডুবে না

প্রেমের মরা জলে ডুবে না
তুমি সুজন দেইখা কইরো পিরিত
মইলে যেন ভুলে না দরদী।।

প্রেম কইরাছে আইয়ুব নবী
যার প্রেমে রহিমা বিবি গো।
তাঁরে আঠাঁর সাল কিরায় খাইলো
আঠাঁর সাল, তাঁরে আঠাঁর সাল করায় খাইলো
তবু রহিমা ছাড়লো না দরদী।।

ও প্রেম করতে দুইদিন ভাংতে একদিন
ওমন প্রেম কইরো না দরদী।।

প্রেম কইরাছে ইছুব নবী
যার প্রেমে জুলেখা বিবি গো।
ও সে প্রেমের দায়ে জেল খাটিল
প্রেমের দায়ে ও সে প্রেমের দায়ে জেল খাটিল
তবুও সে প্রেম ছাড়লো দরদী।।

প্রেম কইরাছে মুসা নবী
যার প্রেমে দুনিয়ার খুজি।
হায়রে পাহাড় জ্বলে সুরমা হইল
পাহাড় জ্বলে, হায়রে পাহাড় জ্বলে সুরমা হইল
তবুও মুসা জ্বললো না দরদী।।


সর্বনাশা পদ্মা নদী



সর্বনাশা পদ্মা নদী তোর কাছে শুধাই
বল আমারে তোর কি রে আর
কুল কিনারা নাই, কুল কিনারা নাই
ও নদীর কুল কিনারা নাই।।

পাড়ির আশায় তাড়াতাড়ি
সকাল বেলা ধরলাম পাড়ি
আমার দিন যে গেল সন্ধ্যা হলো
তবু না কুল পাই।।

পদ্মারে তোর তুফান দেইখা
পরান কাঁপে ডরে
ফেইলা আমায় মারিসনা তোর
সর্বনাশা ঝড়ে।।

একে আমার ভাঙ্গা তরী
মাল্লা ছয়জন শল্লা করি
আমার নায়ে দিল কুড়াল মারি
কেমনে পাড়ে যাই।।



আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে


উথালী পাথালী আমার বুক আমার মনে তে নাই সুখ রে
আমায় ডুবাইলিরে…… আমায় ভাসাইলি রে,
অকুল দরিয়ায় বুঝি কূল নাই রে।

আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে
অকুল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে।।

কুল নাই সীমা নাই অথৈ দরিয়ার পানি
দিবসে নিশিথে ডাকে দিয়া হাতছানি রে
অকুল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে।।

পানসা জলে সাঁই ভাসায়ে সাগরেরও বানে ।।
আমি জীবনের ভেলা ভাসাইলাম।
কেউ না তা জানে রে।।
অকুল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে।।
আমায় ডুবাইলি রে
আমায় ভাসাইলি রে,

আসমান চাহে দরিয়া পানে
দরিয়া আসমান পানে ।।
আরো লক্ষ বছর পার হইল
কেউ না তা জানে
অকুল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে।।
আমায় ডুবাইলি রে
আমায় ভাসাইলি রে,

কুল নাই সীমা নাই অথৈ দরিয়ার

ও আমার দরদী, আগে জানলে


ও আমার দরদী, আগে জানলে
তোর ভাঙ্গা নৌকায় চড়তাম না।
ভাঙ্গা নৌকায় চড়তাম না
আর ঐ দূরের পাড়ি ধরতাম না

তোর নব লাগ পা নিজের পেশা
ঐ নায়ে বোঝাই করতাম না।।

ছিল সোনার দাড় পবনের বৈঠা
ময়ূরপঙ্খী নাও খানা
ওরে চন্দ্র সূরুজ গোলায় ভরি
ফুল ছড়াতো জোছনা।।

শো শো শো দরিয়াতে তুলে ঢেউ
এই তুফানেতে কেউ গাঙ পাড়ি দিও না
বেসম দইরার পানি দেইখ্যা ভয়েতে প্রান বাঁচে না।।

লবঙ্গ *** দেশে যাবার ছিল বাসনা
মাঝ দরিয়ায় নাও ডুবিল উপায় কী তার বল না।।

কল কল ছল ছল করে জল টলমল
আগে চল আগে চল নাই বল তবু চল
ওরে মাঝি তুই কেন হলি আজ বিমনা
সামনে নাচে বিজলী লয়ে কন্যা সোনার বরণা।।

এই যে দুনিয়া কিসের লাগিয়া



এই যে দুনিয়া কিসের লাগিয়া
এত যত্নে গড়াইয়াছেন সাঁই
ছায়া বাজী পুতুল রূপে বানাইয়া মানুষ।
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি পুতুলের কি দোষ।
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি।
তুমি খাওয়াইলে আমি খাই আল্লাহ।
তুমি বেস্ত তুমি দোজখ তুমি ভাল মন্দ
তুমি ফুল তুমি ফল তুমি তাতে গন্ধ।
আমার মনে এই আনন্দ।
কেবল আল্লাহ তোমায় চাই আমি।
তুমি হাকিম হইয়া হুকুম কর পুলিশ হইয়া ধর
সর্প হইয়া দংশন কর ওঝা হইয়া ঝাড়
তুমি বাঁচাও তুমি মার।
তুমি বীনে কেহ নাই আল্লাহ, তুমি বীনে কেহ নাই।।

বহু দিনের পিরিত গো বন্ধু

বহু দিনের পিরিত গো বন্ধু
একই দিনে ভেঙো না।।

এই যে রে ভাই বংশিওয়ালা
বাজাও বাশী দুপুর বেলা আরো একেলা

তোমার বাশীর সুরে মন হরে গো।
ঘরে রইতে দিল না।।

মাতা মইলো, পিতা রে মইলো
গুণের ভাই ছাড়িয়া রে গেল, সঙ্গে নিল না

আমি কী দোষ দিব পরের পুতের গো।
আপন কর্ম ভালো না।।

বন্ধু আমার আলারে ভোলা
না জানি পীড়িতের জ্বালা আরো একেলা

সে যে আসি বলে গেল চইলে গো।
আর তো ফির আইলো না।।

দোল দোল দোলনী রাঙা মাথার চিরুনী


দোল দোল দোলনী রাঙা মাথার চিরুনী
এনে দেব হাট থেকে মান তুমি মরো না

নতুন নতুন খোপাটি তুলে এনে দোপাটি
রাঙা ফিতায় বেধে দিবো মান তুমি করো না।।

চেয়ে দেখ ডালিম ফুলে ঐ জমেছে মৌ
বউ কথা কও ডাকছে পাখি, কয় না কথা বউ।

ঝুমঝুমি মল পায়েতে গয়না সোনার গায়েতে
আরো দেবো নাকের নোলক মান তুমি করো না।।

চাঁদের সাথে নিত্যরাতে তাঁরায় কথা কয়
আপনজনা পর হইলে তাও কী প্রানে সয়।

একটু খানি আসনা কাছে এসে বসো না
এনে দেবো রেশমি চুড়ি মান তুমি করো না।।

মেঘনার কূলে ঘর বান্ধিলাম


মেঘনার কূলে ঘর বান্ধিলাম বড় আশা করে
সে ঘর আমার ভাইঙ্গা গেল সর্বনাশা ঝড়ে রে
মেঘনার সর্বনাশা ঝড়ে

এই ঘরে মোর ছেইলা মাইয়া
থাইকা গেছে দেখি চাইয়া রে।

আমি আজো তাদের খুইজা বেড়াই নদীর চরে চরে
মেঘনা নদীর চরে চরে।।

সর্বহারা হইলাম তবু শেষ হইল না আশা
আমার আমি ঘর বান্ধিলাম *** দুরাশা

আবার যখন বান ডাকিল আমার সব ভাসাইয়া নিল রে।
আমি একলা এখন ঘুইড়া বেড়াই
চোখের পানি ঝরেরে আমার, চোখের পানি ঝরে।।

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা


বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার (২)
বসুন্ধরার বুকে

তেরশো পঁচাশি সালে দামোদরের বান্ধ
ভেঙ্গে পড়ে (২)
বালক ছেলে কোলে করে
বালক ছেলে কোলে করে
স্কুলে পলাই

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার
বসুন্ধরার বুকে

স্রোতি ঘাটায় দেখলাম বিরাট এক সাকু
লুহার খুটি খাম্বা, তলে আছে ফাটুল (২)
কত গরুর গাড়ি, কত ঘুরোঘুরি
কত গরুর গাড়ি, কত ঘুরোঘুরি
নদ-নদী গেলো ভেসে

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার
বসুন্ধরার বুকে

বান উঠলো ভাই ঘরে ঘরে
দেওয়াল চাপা মানুষ মরে(২)
বালক ছেলে কোলে করে
বালক ছেলে কোলে করে
স্কুলে পলাই

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার
বসুন্ধরার বুকে

বর্ধমান পাকুরা মেদিনীপুর মানভুম
দুমকা পাটনা আর মুর্শিদাবাদ বীরভূম(২)
ষোলো ক্রোশ জুড়ে লুহার খুটি মেরে
ষোলো ক্রোশ জুড়ে লুহার খুটি মেরে
জলকে রেখেছে ঘেরে

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার (২)
বসুন্ধরার বুকে……

Add