পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১২

আমি গান গাইতে পারি না


গানে মিলে প্রাণের সন্ধান, সেই গান গাওয়া হলনা
আমি গান গাইতে পারি না।

জানিনা ভাব-ক্রান্তি গাইতে পারিনা সেই গান
যেই গান গাইলে মিলে আঁধারে আলোর সন্ধান
গাইলেন লালন, রাধা রমণ, হাসন রাজা দেওয়ানা
আমি গান গাইতে পারি না

বাউল মুকুন্দ দাস গেয়েছেন দেশেরই গান
বিদ্রোহী নজরুলের গানে পাইলেন মুক্তির সন্ধান
ভাবের গান গাইতে গেলে অভাবে ভাব জাগেনা
আমি গান গাইতে পারি না

আরকুম শাহ্, সিতালং ফকির বলেছেন 'মারফতি গাও'
সৈয়দ শাহ্ নূরের গানে শুকনাতে দৌড়াইলেন নাও
করিম বলে প্রাণ খুলে গাও গাইতে যাদের বাসনা
আমি গান গাইতে পারি না।


ও রে সাম্পানওয়ালা তুই আমারে করলি দেওয়ানা

ওরে সাম্পানওয়ালা তুই আমারে করলি দিওয়ানা 
তুই আমারে,তুই আমারে 
তুই আমারে করলি দিওয়ানা রে সাম্পানওয়ালা.. 

দেইখা রে তোর মুখের হাসি, 
আমার মন হইলো উদাসী 
ঘরে থাকতে,ঘরে থাকতে 
ঘরে থাকতে আমি পারিনা ও রুপসুন্দরি 
তুই আমারে করলি দিওয়ানা 
ওরে রুপ সুন্দরি তুই আমারে করলি দিওয়ানা 

আহা কি রুপ মরি মরি, 
লাগে যেন স্বর্গের পরী 
না দেখলে রুপ,না দেখলে রুপ 
না দেখলে রুপ প্রাণ তো বাঁচেনা 
ও রুপসুন্দরি তুই আমারে করলি দিওয়ানা

সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ


সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ,
আমি সুখের আশায় বইসা আসি, আমায় লইয়া যাও,
কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।

সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ,
এ পাড়েতে আধা সেনা, ও পাড়েতে মাও যাতনা গো,
হয়না আমার পাড়ে যাওয়া, ভুললাম সেই নিবিড় ছাওয়া,
রক্ত শুধু দেখিয়া যাই, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।

সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ,
দিদির আবার ওই শান্তি সেনা, আমি করি গান রচনা গো,
ভোট আসে ভোট যায় আবার, ভোটের পরেই সব পগাড় পার,
হাওয়াতে মিলিয়া যায়, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।

সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ,
বৃদ্ধ বাবুর অনেক জ্বালা, গিলছেনা কেউ কথার খেলা গো,
রানি রাজায় যুদ্ধ হয়, আমাদেরি পরান যায়,
কি করি আজ ভেবে না পাই, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।

ওলো, সুজন মাঝি রে, কোন পাড়ে লাগাইবা তোমার নাউ।


আমার মন-চোরারে কোথা পাই

আমার মন-চোরারে কোথা পাই
কোথা যাই মন আজ কিসে বুঝাই
নিষ্কলঙ্কে ছিলাম ঘরে
কিবা রূপ নয়নে হেরে,
মন তো আমার ধৈর্য নাই
ও সে চাঁদ বটে কি গৌর দেখে
হলাম বেহঁস থেকে থেকে
আমার মনে পড়ে তাই
বিষম রোগে আমায় দংশিলে
বিষ উঠিল বেঘ মূলে
সে বিষ গাঁটরি করা,
না যায় হরা
কি করিবে কবিরাজ গোঁসাই
মন বুঝ ধন দিতে পারে
কে আছে এই ভাব-নগরে
কার কাছে এই মন জুড়াই
যদি গুরু দয়াময়
এই অনল নিভায়,
অধীর লালন বলে, তার কি বল উপায়


নিশা লাগিল রে


নিশা লাগিল রে, নিশা লাগিল রে,
বাঁকা দুই নয়নে নিশা লাগিল রে।
হাসন রাজার পিয়ারীর প্রেমে মজিল রে।।
ছটফট করে হাসন রাজা দেখিয়া চাঁন মুখ
হাসন জানের মুখ দেখিয়া জন্মের গেল দুখ।।
হাসন জানের রূপটা দেখি ফালদি ফালদি উঠে
চিড়া বাড়া হাসন রাজার বুকের মাঝে টুটে।।


একদিন তোর হইবে মরণ

একদিন তোর হইবে মরণ
যমের দূতে আসিয়া তোমায় হাতে দিবে দড়ি
টানিয়া টানিয়া লইয়া যাবে যমেরও পুরি রে
সে সময় কোথায় রইব (তোমার) সুন্দর সুন্দর স্ত্রী
কোথায় রইব রামপাশা, কোথায় লৰণ ছিরিরে
করবায় নিরে হাছন রাজা রামপাশায় জমিদারী
করবায় নিরে কাপনা নদীর পারে ঘুরাঘুরিরে
(আর) যাইবায় নিরে হাছন রাজা রাজগঞ্জ দিয়া
করবায় নিরে হাছন রাজা দেশে দেশে বিয়ারে
ছাড় ছাড় হাছন রাজা, এ ভবের আশা
প্রাণবন্ধের চরণতলে, কর গিয়া বাসারে
গুরম্নর উপদেশ শুনিয়া হাছন রাজায় কয়
সব তেয়াগিলাম আমি, দেও পদাশ্রয় রে
হাছন রাজা একদিন তোর হইবে মরণ।


আর গেলে কি আসিবেন মোর মাহুত বন্ধুরে?


আর গেলে কি আসিবেন মোর মাহুত বন্ধুরে?
আরে হস্তি নড়ান হস্তিরে চড়ান হস্তির গলায় দড়ি
আরে ও সত্যি করিয়া বলরে মাহুত কোন বা দেশে বাড়ি?
হস্তি নড়াঁও হস্তিরে চড়াঁও হস্তিরে পায়ে বেড়ি
আমি সত্য করিয়া কইলাম নারী গৌরীপুরে বাড়ি।
তোমরা গেইলে কি আসিবেন মোর মাহুত বন্ধুরে?
আরে হস্তি নড়ান হস্তিরে চড়ান হস্তির পায়ে বেড়ি
আরে সত্য কইরা কনরে মাহুত ঘরে কয়জন নারী রে?
হস্তি নড়ান হস্তিরে চড়ান হস্তির পায়ে বেড়ি
আমি সত্য করিয়া কইলাম কন্যা বিয়া নাহি করিরে।।


মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে


মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে
মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

মায়ে বাপে কইরা বন্দী খুশিরও মাজারে
মায়ে বাপে কইরা বন্দী খুশিরও মাজারে
লালে ধলায় হইলাম বন্দী পিঞ্জিরার ভিতরে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

পিঞ্জিরায় সামাইয়া ময়নায় ছটফট ছটফট করে
পিঞ্জিরায় সামাইয়া ময়নায় ছটফট ছটফট করে
মজবুতও পিঞ্জিরা ময়নায় ভাঙ্গিতে না পারে রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

উড়িয়া যাইব সুয়া পাখি পইরা রইব কায়া
উড়িয়া যাইব সুয়া পাখি পইরা রইব কায়া
কিসের দেশ কিসের খেশ কিসের মায়া দয়া রে
কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে

হাছন রাজায় ডাকতো যখন ময়না আয় রে আয়
হাছন রাজা ডাকতো যখন ময়না আয় রে আয়
এমনও নিষ্ঠুরও ময়না আর কি ফিরা চায় রে

কান্দে হাছন রাজার মনমুনিয়া রে


আমি না লইলাম আল্লাজির নাম



আমি না লইলাম আল্লাজির নাম।
না কইলাম তার কাম।
বৃথা কাজে হাছন রাজায় দিন গুয়াইলাম।।
ভবের কাজে মত্ত হইয়া দিন গেল গইয়া।
আপন কার্য না করিলাম, রহিলাম ভুলিয়া।।
নাম লইব নাম লইব করিয়া আয়ু হইল শেষ।
এখনও না করিলাম প্রাণ বন্ধের উদ্দেশ।।
আশয় বিষয় পাইয়া হাছন (তুমি) কর জমিদারি।
চিরকাল থাকিবেনি হাছনরাজা লক্ষ্মণছিরি।।
কান্দে কান্দে হাছন রাজা, কী হবে উপায়।
হাসরের দিন যখন পুছিবে খোদায়।।
ছাড় ছাড় হাছন রাজা, এই ভবের আশ।
(কেবল) এক মনে চিন্তা কর, হইতাম বন্ধের দাস।


আমার গায়ে যত দুঃখ সয়


আমার গায়ে যত দুঃখ সয়
বন্ধুয়া রে করো তোমার মনে যাহা লয়।।
নিঠুর বন্ধু রে, বলেছিলে আমার হবে
মন দিয়াছি এই ভেবে
সাক্ষী কেউ ছিলনা সেসময়।
সাক্ষী শুধু চন্দ্র-তারা,
একদিন তুমি পড়বে ধরা রে বন্ধু
ত্রিভুবনের বিচার যেদিন হয়।।
নিঠুর বন্ধু রে, দুঃখ দিয়া হিয়ার ভিতর
একদিনও না লইলে খবর
এইকি তোমার প্রেমের পরিচয় ও বন্ধুরে।
মিছামিছি আশা দিয়া
কেন বা প্রেম শিখাইলা রে বন্ধু
দূরে থাকা উচিত কি আর হয়।।
(পাষাণ বন্ধুরে) নিঠুর বন্ধুরে, বিচ্ছেদের বাজারে গিয়া
তোমার প্রেম বিকি দিয়া
করব না প্রেম আর যদি কেউ কয় ও বন্ধুরে।
উকিলের হয়েছে জানা
কেবলই চোরের কারখানা রে বন্ধু
চোরে চোরে বেয়াই আলা হয়।।


আমি তোমার নাম লইয়া কাঁন্দি


পরাণ বন্ধুরে
আমি তোমার নাম লইয়া কাঁন্দি
গগনেতে ডাকে দেয়া
আসমান হইলো আঁন্দি।
তোমার বাড়ী আমার বাড়ী
মধ্যে সরূ নদী
সেই নদীকে মনে হইলো
অকুল ও জ্বলদি রে বন্ধু
আমি তোমার নাম লইয়া কাঁন্দি।
উড়ীয়া যায়রে সুখুয়ার পংক্ষী
পইড়া রইলো ছাঁয়া
কোন পরাণে বিদেশ রইলা
ভূলি দেশের মাঁয়ারে বন্ধু
আমি তোমার নাম লইয়া কাঁন্দি।


ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে


ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে
ফাঁদ বসাইছে ফান্দি রে ভাই পুঁটি মাছো দিয়া
ওরে মাছের লোভে বোকা বগা পড়ে উড়াল দিয়া রে।।
ফান্দে পড়িয়া বগা করে টানাটুনা
ওরে আহারে কুংকুরার সুতা, হল লোহার গুনারে।।
ফান্দে পড়িয়া বগা করে হায়রে হায়
ওরে আহারে দারুন বিধি সাথী ছাইড়া যায় রে।।
আর বগা আহার করে ধল্লা নদীর পারেরে।।
উড়িয়া যায় চখুয়ার পঙ্খী বগীক বলে ঠারে
ওরে তোমার বগা বন্দী হইছে ধল্লা নদীর পারে রে।
এই কথা শুনিয়া রে বগী দুই পাখা মেলিল
ওরে ধল্লা নদীর পারে যাইয়া দরশন দিল রে।
বগাক্ দেখিয়া বগিক কান্দে রে
বগীক্ দেখিয়া বগা কান্দেরে।


রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১২

আর কতকাল ভাসবো আমি

আর কতকাল ভাসবো আমি
দুঃখের সারী গাইয়া
জনম গেল ঘাটে ঘাটে আমার
জনম গেল ঘাটে ঘাটে
ভাঙা তরী বাইয়া রে আমার
ভাঙ্গা তরী বাইয়া।।

পরের বোঝা বইয়া বইয়া
নৌকার গলুই গেছে খইয়ারে।
আমার নিজের বোঝা কে বলিবে রে।
রাখবো কোথায় যাওয়ারে আমি
রাখবো কোথায় যাওয়া।।

এই জীবনে দেখলাম নদীর
কতই ভাঙা গড়া
আমার দেহতরী ভাঙলো শুধু
না জাগিলো চড়া

আমার ভবে কেউ কি আছে
দুঃখ কবো তাহার কাছে রে
আমি রইলাম শুধু দয়াল আল্লাহ রে
আমি রইলাম শুধু দয়াল আল্লাহ
তোমার পানে চাইয়া রে
আমি তোমার পানে চাইয়া।।


মরিলে কান্দিস না আমার দায়

মরিলে কান্দিস না আমার দায় ।।
রে যাদু ধন ……মরিলে কান্দিস না আমার দায়
মরিলে কান্দিস না আমার দায়

সুরা ইয়াসীন পাঠ করিও
বসিয়া কাছায়
যাইবার কালে বাঁচি যেন
শয়তানের ধোঁকায়
রে যাদুধন……মরিলে কান্দিস না আমার দায়

বুক বান্ধিয়া কাছে বইসা গোছল করাইবা
কান্দনের বদলে মুখে কলমা পড়িবা
রে যাদু ধন …..
……মরিলে কান্দিস না আমার দায়!

কাফন পিন্দাইয়া আতর গোলাপ দিয়া গায়
তেলাওয়াতের ধ্বনি যেন ।
ঘরে শোনা যায়
রে যাদু ধন ……মরিলে কান্দিস না আমার দায়!

কাফন পড়িয়া যদি কান্দো আমার দায়
মসজিদে বসিয়া কাইন্দো আল্লা’রই দরগায়
রে যাদু ধন ……
….মরিলে কান্দিস না আমার দায়।


চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়

ও কারিগর, দয়ার সাগর, ওগো দয়াময়
চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়।

চান্নি পসর চান্নি পসর আহারে আলো
কে বেসেছে কে বেসেছে তাহারে ভালো
কে দিয়েছে নিশি রাইতে দুধের চাদর গায়
কে খেলেছে চন্দ্র খেলা ধবল ছায়ায়

এখন খেলা থেমে গেছে মুছে গেছে রং
অনেক দূরে বাজছে ঘণ্টা ঢং ঢং ঢং
এখন যাব অচিন দেশে, অচিন কোন গায়
চন্দ্রকারিগরের কাছে ধবল পঙ্খী নায়

ও কারিগর, দয়ার সাগর, ওগো দয়াময়
চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়।


শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১২

আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি


আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি ।।
নিভা ছিল মনের আগুন জ্বালাইয়া গেলি প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি…

আম ধরে থোকা থোকা তেতুল ধরে ব্যাকা…হায়রে তেতুল ধরে ব্যাকা
আমার আসবে বলে শ্যাম কালাচাঁন নাহি দিল দেখা প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি……

আমার শিয়রে শাশুড়ী ঘুমায় জলন্ত নাগিনী… হায়রে জলন্ত নাগিনী ।।
আমার পৈঠানে ননদী শুয়ে দুরন্ত ডাকিনী প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি…

আম গাছে আম ধরে জাম গাছে জাম……হায়রে জাম গাছে জাম ।।
আমি পন্থের দিকে চাইয়া থাকি
আসেনি মোর শ্যাম প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি প্রাণ কোকিলা রে

প্রাণ কোকিলা রে
বন্ধুর বাড়ী আমার বাড়ী মইধ্যে জলের বেড়া
ওরে হাত বাড়াইয়া দিছে পাঢ কপাল দেখি পোড়া

প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি প্রাণ কোকিলা রে
আমায় এত রাতে ক্যানে ডাক দিলি


প্রেমের মরা জলে ডুবে না

প্রেমের মরা জলে ডুবে না
তুমি সুজন দেইখা কইরো পিরিত
মইলে যেন ভুলে না দরদী।।

প্রেম কইরাছে আইয়ুব নবী
যার প্রেমে রহিমা বিবি গো।
তাঁরে আঠাঁর সাল কিরায় খাইলো
আঠাঁর সাল, তাঁরে আঠাঁর সাল করায় খাইলো
তবু রহিমা ছাড়লো না দরদী।।

ও প্রেম করতে দুইদিন ভাংতে একদিন
ওমন প্রেম কইরো না দরদী।।

প্রেম কইরাছে ইছুব নবী
যার প্রেমে জুলেখা বিবি গো।
ও সে প্রেমের দায়ে জেল খাটিল
প্রেমের দায়ে ও সে প্রেমের দায়ে জেল খাটিল
তবুও সে প্রেম ছাড়লো দরদী।।

প্রেম কইরাছে মুসা নবী
যার প্রেমে দুনিয়ার খুজি।
হায়রে পাহাড় জ্বলে সুরমা হইল
পাহাড় জ্বলে, হায়রে পাহাড় জ্বলে সুরমা হইল
তবুও মুসা জ্বললো না দরদী।।


সর্বনাশা পদ্মা নদী



সর্বনাশা পদ্মা নদী তোর কাছে শুধাই
বল আমারে তোর কি রে আর
কুল কিনারা নাই, কুল কিনারা নাই
ও নদীর কুল কিনারা নাই।।

পাড়ির আশায় তাড়াতাড়ি
সকাল বেলা ধরলাম পাড়ি
আমার দিন যে গেল সন্ধ্যা হলো
তবু না কুল পাই।।

পদ্মারে তোর তুফান দেইখা
পরান কাঁপে ডরে
ফেইলা আমায় মারিসনা তোর
সর্বনাশা ঝড়ে।।

একে আমার ভাঙ্গা তরী
মাল্লা ছয়জন শল্লা করি
আমার নায়ে দিল কুড়াল মারি
কেমনে পাড়ে যাই।।



আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে


উথালী পাথালী আমার বুক আমার মনে তে নাই সুখ রে
আমায় ডুবাইলিরে…… আমায় ভাসাইলি রে,
অকুল দরিয়ায় বুঝি কূল নাই রে।

আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে
অকুল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে।।

কুল নাই সীমা নাই অথৈ দরিয়ার পানি
দিবসে নিশিথে ডাকে দিয়া হাতছানি রে
অকুল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে।।

পানসা জলে সাঁই ভাসায়ে সাগরেরও বানে ।।
আমি জীবনের ভেলা ভাসাইলাম।
কেউ না তা জানে রে।।
অকুল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে।।
আমায় ডুবাইলি রে
আমায় ভাসাইলি রে,

আসমান চাহে দরিয়া পানে
দরিয়া আসমান পানে ।।
আরো লক্ষ বছর পার হইল
কেউ না তা জানে
অকুল দরিয়ার বুঝি কূল নাই রে।।
আমায় ডুবাইলি রে
আমায় ভাসাইলি রে,

কুল নাই সীমা নাই অথৈ দরিয়ার

ও আমার দরদী, আগে জানলে


ও আমার দরদী, আগে জানলে
তোর ভাঙ্গা নৌকায় চড়তাম না।
ভাঙ্গা নৌকায় চড়তাম না
আর ঐ দূরের পাড়ি ধরতাম না

তোর নব লাগ পা নিজের পেশা
ঐ নায়ে বোঝাই করতাম না।।

ছিল সোনার দাড় পবনের বৈঠা
ময়ূরপঙ্খী নাও খানা
ওরে চন্দ্র সূরুজ গোলায় ভরি
ফুল ছড়াতো জোছনা।।

শো শো শো দরিয়াতে তুলে ঢেউ
এই তুফানেতে কেউ গাঙ পাড়ি দিও না
বেসম দইরার পানি দেইখ্যা ভয়েতে প্রান বাঁচে না।।

লবঙ্গ *** দেশে যাবার ছিল বাসনা
মাঝ দরিয়ায় নাও ডুবিল উপায় কী তার বল না।।

কল কল ছল ছল করে জল টলমল
আগে চল আগে চল নাই বল তবু চল
ওরে মাঝি তুই কেন হলি আজ বিমনা
সামনে নাচে বিজলী লয়ে কন্যা সোনার বরণা।।

এই যে দুনিয়া কিসের লাগিয়া



এই যে দুনিয়া কিসের লাগিয়া
এত যত্নে গড়াইয়াছেন সাঁই
ছায়া বাজী পুতুল রূপে বানাইয়া মানুষ।
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি পুতুলের কি দোষ।
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি।
তুমি খাওয়াইলে আমি খাই আল্লাহ।
তুমি বেস্ত তুমি দোজখ তুমি ভাল মন্দ
তুমি ফুল তুমি ফল তুমি তাতে গন্ধ।
আমার মনে এই আনন্দ।
কেবল আল্লাহ তোমায় চাই আমি।
তুমি হাকিম হইয়া হুকুম কর পুলিশ হইয়া ধর
সর্প হইয়া দংশন কর ওঝা হইয়া ঝাড়
তুমি বাঁচাও তুমি মার।
তুমি বীনে কেহ নাই আল্লাহ, তুমি বীনে কেহ নাই।।

বহু দিনের পিরিত গো বন্ধু

বহু দিনের পিরিত গো বন্ধু
একই দিনে ভেঙো না।।

এই যে রে ভাই বংশিওয়ালা
বাজাও বাশী দুপুর বেলা আরো একেলা

তোমার বাশীর সুরে মন হরে গো।
ঘরে রইতে দিল না।।

মাতা মইলো, পিতা রে মইলো
গুণের ভাই ছাড়িয়া রে গেল, সঙ্গে নিল না

আমি কী দোষ দিব পরের পুতের গো।
আপন কর্ম ভালো না।।

বন্ধু আমার আলারে ভোলা
না জানি পীড়িতের জ্বালা আরো একেলা

সে যে আসি বলে গেল চইলে গো।
আর তো ফির আইলো না।।

দোল দোল দোলনী রাঙা মাথার চিরুনী


দোল দোল দোলনী রাঙা মাথার চিরুনী
এনে দেব হাট থেকে মান তুমি মরো না

নতুন নতুন খোপাটি তুলে এনে দোপাটি
রাঙা ফিতায় বেধে দিবো মান তুমি করো না।।

চেয়ে দেখ ডালিম ফুলে ঐ জমেছে মৌ
বউ কথা কও ডাকছে পাখি, কয় না কথা বউ।

ঝুমঝুমি মল পায়েতে গয়না সোনার গায়েতে
আরো দেবো নাকের নোলক মান তুমি করো না।।

চাঁদের সাথে নিত্যরাতে তাঁরায় কথা কয়
আপনজনা পর হইলে তাও কী প্রানে সয়।

একটু খানি আসনা কাছে এসে বসো না
এনে দেবো রেশমি চুড়ি মান তুমি করো না।।

মেঘনার কূলে ঘর বান্ধিলাম


মেঘনার কূলে ঘর বান্ধিলাম বড় আশা করে
সে ঘর আমার ভাইঙ্গা গেল সর্বনাশা ঝড়ে রে
মেঘনার সর্বনাশা ঝড়ে

এই ঘরে মোর ছেইলা মাইয়া
থাইকা গেছে দেখি চাইয়া রে।

আমি আজো তাদের খুইজা বেড়াই নদীর চরে চরে
মেঘনা নদীর চরে চরে।।

সর্বহারা হইলাম তবু শেষ হইল না আশা
আমার আমি ঘর বান্ধিলাম *** দুরাশা

আবার যখন বান ডাকিল আমার সব ভাসাইয়া নিল রে।
আমি একলা এখন ঘুইড়া বেড়াই
চোখের পানি ঝরেরে আমার, চোখের পানি ঝরে।।

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা


বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার (২)
বসুন্ধরার বুকে

তেরশো পঁচাশি সালে দামোদরের বান্ধ
ভেঙ্গে পড়ে (২)
বালক ছেলে কোলে করে
বালক ছেলে কোলে করে
স্কুলে পলাই

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার
বসুন্ধরার বুকে

স্রোতি ঘাটায় দেখলাম বিরাট এক সাকু
লুহার খুটি খাম্বা, তলে আছে ফাটুল (২)
কত গরুর গাড়ি, কত ঘুরোঘুরি
কত গরুর গাড়ি, কত ঘুরোঘুরি
নদ-নদী গেলো ভেসে

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার
বসুন্ধরার বুকে

বান উঠলো ভাই ঘরে ঘরে
দেওয়াল চাপা মানুষ মরে(২)
বালক ছেলে কোলে করে
বালক ছেলে কোলে করে
স্কুলে পলাই

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার
বসুন্ধরার বুকে

বর্ধমান পাকুরা মেদিনীপুর মানভুম
দুমকা পাটনা আর মুর্শিদাবাদ বীরভূম(২)
ষোলো ক্রোশ জুড়ে লুহার খুটি মেরে
ষোলো ক্রোশ জুড়ে লুহার খুটি মেরে
জলকে রেখেছে ঘেরে

বসুন্ধরার বুকে বরষারি ধারা
ধারা ভরা হাহাকার (২)
বসুন্ধরার বুকে……

শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২

কারে দেখাবো মনের দুঃখ গো


কারে দেখাবো মনের দুঃখ গো
আমি বুক চিড়িয়া ।
অন্তরে তুষেরই অনল
জ্বলে গইয়া গইয়া ।।

ঘর বাঁধলাম প্রাণবন্ধের সনে
কত কথা ছিল মনে গো ।
ভাঙ্গিল আদরের জোড়া
কোন জন বাদী হইয়া ।।

কার ফলন্ত গাছ উখারিলাম
কারে পুত্রশোকে গালি দিলাম গো ।
না জানি কোন অভিশাপে
এমন গেল হইয়া ।।

কথা ছিল সঙ্গে নিব
সঙ্গে আমায় নাহি নিল গো ।
রাধারমণ ভবে রইল
জিতে মরা হইয়া ।।


নিশিতে যাইও ফুলবনে



নিশিতে যাইও ফুলবনে
- রে ভোমরা।
নিশিতে যাইও ফুলবনে।
জ্বালায়ে চান্দের বাতি
আমি জেগে রব সারা-রাতি গো;
কব কথা শিশিরের সনে
- রে ভোমরা।
নিশিতে যাইও ফুলবনে।

যদিবা ঘুমায়ে পড়ি-
স্বপনের পথ ধরি গো,
যেও তুমি নীরব চরণে
- রে ভোমরা।
(আমার ডাল যেন ভাঙে না,
আমার ফুল যেন ভাঙে না,
ফুলের ঘুম যেন ভাঙে না)।
যেও তুমি নীরব চরণে
- রে ভোমরা।
নিশিতে যাইও ফুলবনে।





নির্জন যমুনার কূলে


নির্জন যমুনার কূলে
বসিয়া কদম্ব তলে
বাঁজায় বাঁশী বন্ধু শ্যামরায় ।।

বাঁশীতে কি মধু ভরা আমারে করিল সারা
আমি নারী ঘরে থাকা দায়
কালার বাঁশী হলো বাম বলে শুধু রাধা নাম।।
কুলবঁধুর কুলমান মজায়
বাঁশীর সুরে অঙ্গ জ্বলে ঘরের জল বাহিরে ফেলে
মনে লয় যামু যমুনায়

শোন গো ললিতে সখী বন্ধু ছাড়া কেমনে থাকি
প্রাণপাখী উড়ে যেতে চায় ।।
আমি নারী কুলবালা কালার বাঁশী দিল জ্বালা।।
অঙ্গ কালা বন্ধুর চিন্তায়
যদি আমার কেউ থাকো বন্ধু এনে প্রাণটি রাখো
মন প্রাণ সব সঁপিব তার পা’য়

ভুবনমোহন সুরে ভাইটাল নদী উজান ধরে
জ্বলে অনল আমার অন্তরায়
মনের লয় সন্ন্যাসী হইয়া দেখবো তারে তল্লাসিয়া
কোন বনে সে বাঁশরী বাজায়
নইলে কলসী বেন্ধে গলে ঝাঁপ দেবো যমুনায় জলে
প্রাণ ত্যাজিব বলে দূরবীন শাহ


সোমবার, ২ এপ্রিল, ২০১২

এক ফুলে চার রঙ ধরেছে



এক ফুলে চার রঙ ধরেছে
সে ফুলে ভাব নগরে কি শোভা করেছে।।
কারণবারির মধ্যে সে ফুল ভেসে বেড়ায় একুল ওকূল
শ্বেতবরণ এক ভ্রমর ব্যাকুল সে ফুলের মধুর আশে ঘুরতেছে।
মূল ছাড়া সে ফুলের লতা ডাল ছাড়া তার আছে পাতা
এ বড় অকৈতব কথা
ফুলের ভাব কই কার কাছে।
ডুবে দেখ মন দেল-দরিয়ায়
যে ফুলে নবীর জন্ম হয়
সে ফুল তো সামান্য ফুল নয়,
লালন কয় যার মূল নাই দেশে।।


শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১২

কে যাস রে ভাটি গাঙ বাইয়া


কে যাস রে ভাটি গাঙ বাইয়া
আমার ভাইধন রে কইয়ো, নাইওর নিতো বইলা
তোরা কে যাস কে যাস

বছর খানি ঘুইরা গেল, গেল রে
ভাইয়ের দেখা পাইলাম না, পাইলাম না

কইলজা আমার পুইড়া গেল, গেল রে
ভাইয়ের দেখা পাইলাম না, পাইলাম না

ছিলাম রে কতই আশা লইয়া
ভাই না আইলো গেল গেল, রথের মেলা চইলা
তোরা কে যাস কে যাস

প্রাণ কান্দে , কান্দে
প্রান কান্দে কান্দে প্রান কান্দে রে, প্রান কান্দে
নয়ন ঝরে ঝরে নয়ন ঝরে রে, নয়ন ঝরে

পোড়া মনরে বুঝাইলে বুঝে না
কান্দে কান্দে প্রান কান্দে

সুজন মাঝিরে ভাইরে কইয়ো গিয়া
না আসিলে স্বপনেতে দেখা দিত বইলা
তোরা কে যাস কে যাস

সিঁন্দুরিয়া মেঘ উইড়া আইলো রে
ভাইয়ের খবর আনলো না, আনলো না

ভাটির চরে নৌকা ফিরা আইলো রে
ভাইয়ের খবর আনলো না, আনলো না

নির্দয় বিধি রে তুমিই সদয় হইয়া
ভাইরে আইনো নইলে আমার পরান যাবে জ্বইলা
তোরা কে যাস কে যাস

কে যাস রে ভাটি গাঙ বাইয়া
আমার ভাইধন রে কইয়ো, নাইওর নিতো বইলা
তোরা কে যাস কে যাস |

শনিবার, ২৪ মার্চ, ২০১২

শোনোগো দখিনো হাওয়া প্রেম করেছি আমি



শোনোগো দখিনো হাওয়া প্রেম করেছি আমি 
লেগেছে চোখেতে নেশা দিক ভুলেছি আমি ||

মনেতে লুকানো ছিল সুপ্ত যে তিয়াসা
জাগিল মধু লগনেতে বাড়ালো পিয়াসা ||

উতলা করেছে মোরে আমারই ভালবাসা
অনুরাগে প্রেম সলিলে ডুব দিয়েছি আমি
শোনোগো মধুরো হাওয়া প্রেম করেছি আমি 

দহন বেলাতে আমি প্রেমেরো তাপসী
বরষাতে প্রেমো-ধারা শরতেরো শশী ||

রচিগো হেমন্তে মায়া শীতেতে উদাসী
হয়েছি বসন্তে আমি বাসনা বিলাসী

শোনোগো মদিরো হাওয়া প্রেম করেছি আমি 
লেগেছে চোখেতে নেশা দিক ভুলেছি আমি |


বৃহস্পতিবার, ২২ মার্চ, ২০১২

আমার এ ঘর খানায় কে বিরাজ করে


আমার এ ঘর খানায় কে বিরাজ করে
আমি জনম ভরে একদিন দেখলাম না রে
লড়ে চড়ে ঈষাণ কোণে দেখতে পাই না এ নয়নে
হাতের কাছে যার ভবের হাট বাজার
ধরতে গেলে হাতে পাইনে তারে

সবে বলে প্রাণ পাখী  
      শুনে চুপে চুপে থাকি
জল কি হুতাশন মাটী কি পবন
কেউ বলেনা একটা নির্ণয় করে ...


আপন ঘরের খবর পাইনা 
     বাঞ্ছা করি পরকে চেনা
লালন বলে পর  পথে পরমেশ্বর
সে কেমন রূপ আমি কি কব রে ....


আমার এ ঘর খানায় কে বিরাজ করে
আমি জনম ভরে একদিন দেখলাম না রে...

                             কিরণ চন্দ্র রায় এর গাওয়া



সবে বলে ‘লালন ফকির হিন্দু কি যবন


সবে বলে ‘লালন ফকির হিন্দু কি যবন ...’
লালন বলে আমার আমি না জানি সন্ধান,

একই ঘাটে আসা যাওয়া
            একই পাটনী দিচ্ছে খেয়া
কেউ খায়না কারো ছোঁয়া
           বিভিন্ন জল কে কোথা পায়?


বেদ পুরান করেছে জারি
              যবনের সাঁই হিন্দুর হরি
লালন বলে বুঝতে না’রি
            এরূপ সৃষ্টি করলেন
                 কি রূপ প্রমাণ ...



বিবিদের নাই মোসলমানী
         পৈতা নাই যার সে’ও বাম্‌নী
বোঝারে রে ভাই দীব্য জ্ঞানী
     লালন তেমনি ফাতনার জাতে টান।।

রবিবার, ১৮ মার্চ, ২০১২

সখী কুঞ্জ সাজাও গো. আজ আমার প্রাণনাথ আসিতে পারে


বন্ধে মায়া লাগাইছে,পিরিতি শিখাইছে


বন্ধে মায়া লাগাইছে,পিরিতি শিখাইছে
দেওয়ানা বানাইছে
কি যাদু করিয়া বন্ধে,মায়া লাগাইছে।

বসে ভাবি নিরালায়
আগেতো জানিনা বন্ধের পিরিতের জালায়
যেমন ইটের ভাটায় কয়লা দিয়া আগুন জালাইছে।

আমি কি বলিব আর
বিচ্ছেদের আগুনে পুড়ে কলিজা আঙ্গার
প্রান বন্ধের পিরিতের নেশায় কুলমান গেছে।

বাউল আব্দুল করিম গায়
ভুলিতে পারিনা আমার মনে যারে চায়
কুলনাশা পিরিতের নেশায় কুলমান গেছে।


কেউ বলে শাহ আবদুল করিম কেউ বলে পাগল


কেউ বলে শাহ আবদুল করিম কেউ বলে পাগল। 
যার যা ইচ্ছা তাই বলে বুঝি না আসল নকল।।


জন্ম আমার সিলেট জেলায়
সুনামগঞ্জ মুহাকুমায়।।
বসত করি দিরায় থানায়।।
গায়ের নাম হয় উজানধল।


কেউ বলে শাহ আবদুল  করিম  কেউ বলে পাগল। 
যার যা ইচ্ছা তাই বলে বুঝি না আসল নকল।।

কালনী নদির উত্তর পাড়ে আছি এক কুড়ে ঘরে,
পোস্ট অফিস হয় ধলবাজারে ইউনিয়ন তাড়োল।


কেউ বলে শাহ আবদুল  করিম  কেউ বলে পাগল। 
যার যা ইচ্ছা তাই বলে বুঝি না আসল নকল।।

পিতার নাম ইব্রাহিম আলি
সোজা সরল আল্লাহর অলি
পীর মুরসিদের চরন ধুলি।।
করিমের সম্বল।

কেউ বলে শাহ আবদুল  করিম  কেউ বলে পাগল। 
যার যা ইচ্ছা তাই বলে বুঝি না আসল নকল।।


আইলায় না, আইলায় নারে


আইলায় না, আইলায় নারে 
বন্ধু করলায়রে দিওয়ানা
সূখ বশন্ত সূখের কালে
শান্তিতো দিলায় নারে 
বন্ধু আইলায় নারে।

অতি সাধের পিরিতরে বন্ধু
নাইরে যার তুলনা
দারুন বিচ্ছেদের জালা
আমি আগেতো জানি নাইরে 
বন্ধু আইলায় নারে।

গলে মোর কলংকের মালা
কেউ ভালবাসে না
কূল মান দিয়া কি করিব আমি 
তোমায় যদি পাই নারে
বন্ধু আইলায় নারে।

আব্দুল করিম কূল মান হারা
তুমি কি জানো না
সুসময়ে সুজন বন্ধু
দেখাতো দিলায় নারে
বন্ধু আইলায় নারে।

আমি ফুল বন্ধু ফুলের ভ্রমরা


আমি ফুল বন্ধু ফুলের ভ্রমরা
কেমনে ভুলিব আমি বাঁচি না তারে ছাড়া ।।

না আসিলে কালো ভ্রমর
কে হবে যৌবনের দোসর?
সে বিনে মোর শূন্য বাসর আমি জিয়ন্তে মরা ।।

কুল-মানের আশা ছেড়ে
মন-প্রাণ দিয়াছি যারে
এখন সে কাঁদায় আমারে, এই কী তার প্রেমধারা ?

শুইলে স্বপনে দেখি
ঘুম ভাঙ্গিলে সবই ফাঁকি
কত ভাবে তারে ডাকি তবু সে দেয় না সাড়া ।।

আশা পথে চেয়ে থাকি
তারে পাইলে হব সুখি
এ করিমের মরণ বাকী, রইলো সে যে অধরা ।।

কৃষ্ণ আইলা রাধার কুঞ্জে


কৃষ্ণ আইলা রাধার কুঞ্জে,
ফুলে বাইলা ভোমরা
ময়ুর বেশেতে সাজুইন রাধিকা।

সোয়া চন্দন ফুলের মালা,
সখিগণে লইয়া আইলা
কৃষ্ণ দিলায় রাধার গলে,
বাসর হইল উজালা
বাসর হইল উজালা গো,
বাসর হইলো উজালা।
ময়ুর বেশেতে সাজুইন রাধিকা।

কৃষ্ণ দিলায় রাধার গলে,
রাধায় দিলা কৃষ্ণর গলে
আনন্দে সখীগণ নাচে
দেখিয়া প্রেমের খেলা
দেখিয়া প্রেমের খেলা গো
দেখিয়া প্রেমের খেলা।
ময়ুর বেশেতে সাজুইন রাধিকা।

কৃষ্ণ প্রেমের প্রেমিক যারা,
নাচে গায় খেলে তারা
কুল ও মানের ভয় রাখে না,
ললিত ও আর বিশখা
ললিত ও আর বিশখা গো
ললিত ও আর বিশখা।
ময়ুর বেশেতে সাজুইন রাধিকা।

শনিবার, ১৭ মার্চ, ২০১২

কে বানাইলো এমন রঙমহল খানা


কে বানাইলো এমন রঙমহল খানা
হাওয়া দমে দেখ তারে আসল বেনা ।।

বিনা তেলে জ্বলে বাতি
দেখতে যেমন মুক্তা মতি
...জলক দেয় তার চতুর্ভিতি মধ্যে খানা ।।

তিল পরিমাণ জায়গা সে যে
হদ্দরূপ তাহার মাঝে
কালায় শোনে আঁধলায় দেখে নেংড়ার নাচনা ।।


যে গঠিল এ রঙমহল, না জানি তার রূপটি কেমন।
সিরাজ সাঁই কয় নাই রে লালন তার তুলনা।


কে বানাইলো এমন রঙমহল খানা।।

হাওয়া দমে দেখ তারে আসল বেনা...
কে বানাইলো এমন রঙমহল খানা।


কে বানাইলো এমন রঙমহল খানা।।




আধার ঘরে জ্বলছে বাতি


কি সন্ধানে যাই সেখানে আমি মনের মানুষ যেখানে
আধার ঘরে জ্বলছে বাতি দিবা রাতি নাই সেখানে।।
যেতে পথে কাম নদীতে পারি দিতে ত্রিবিনে
কতো ধনীর ভারা যাচ্ছে মারা পরে নদীর তোড় তুফানে।।
রসিক যারা চতুর তারা তারাই নদীর ধারা চেনে
উজান তরী যাচ্ছে বেয়ে তারাই স্বরূপ সাধন জানে।।
লালন বলে ম’লাম জ্বলে দিবানিশি জলে স্থলে
আমি মণি হারা ফণির মত হারা হইলাম পিতৃধনে।


শুক্রবার, ১৬ মার্চ, ২০১২

কে তাহারে চিনতে পারে


ভবে কে তাহারে চিনতে পারে
এসে মদীনায় তরীক জানায়
এ সংসারে।।
সবে বলে নবী নবী
নবী কি নিরঞ্জন ভাবি
দেল ঢুঁড়িলে জানতে পাবি
আহম্মদ নাম হল কারে।।
যার মর্ম সে যদি না কয়
কার সাধ্য কে জানিতে পায়
তাইতে আমার দীন দয়াময়
মানুষরূপে ঘোরে ফেরে।।
নফী এজবাত যে বোঝেনা
মিছেরে তার পড়াশুনা
লালন কয় ভেদ উপাসনা
না জেনে চটকে মারে।।

পাখি কখন জানি উড়ে যায়


পাখি কখন জানি উড়ে যায়
একটা বদ্ হাওয়া লেগে খাঁচায়

ভেবে অন্ত নাহি দেখি
কার বা খাঁচায় কে-বা পাখি।
আমার এই আঙ্গিনায় বসে
আমারে মজাতে চায়।

খাঁচার আড়া প'ল খসে
পাখি আর দাঁড়াবে কী সে?
আমি এই ভাবনা ভাবছি মিছে-
আমার চমকজ্বরা বইছে গায়।

আগে যদি যেত জানা
জংলা কভূ পোষ মানে না।
তা হলে হয় প্রেম করতাম না
লালন ফকির কেঁদে কয় ...

আমারে কি রাখবেন গুরু চরণদাসী


আমারে কি রাখবেন গুরু চরণদাসী?
ইতরপনা কার্য আমার অহর্নিশি।।
  জঠর যন্ত্রণা পেয়ে
 এলাম যে করার দিয়ে
 রইলাম তা সব ভুলিয়ে
  ভবে আসি।।
চিনলাম না সে গুরু কি ধন
জানলাম না তার সেবা সাধন
ঘুরতে বুঝি হল রে মন
চোরাশি।।
গুরু যার থাকে সদায়
শমন বলে তার কিসের ভয়
লালন বলে, মন তুই আমার
করলি দুষি।।

কে তোমার যাবে সাথে?



ও মন, কে তোমার যাবে সাথে?
কোথা রবে ভাই বন্ধু সব
              পড়বি যেদিন কালের হাতে।।
যে আশার আশায় আসা
হল না তার রতি মাসা
ঘটালি রে কি দুর্দশা
              কু-সঙ্গে কু-রঙ্গে মেতে।।
নিকাশের দায় করে খাড়া
মারবি আতশের কোড়া
সোজা করবে বেঁকাতেড়া
              জোর জবর খাটবে না তাতে।।
যারে ধরে পাবি নিস্তার
তারে সদায় ভাবিরে পর
সিরাজ সাঁই কয়, লালন তোমার
              সারে ভবের কুটুম্বিতে।।

আপন ঘরের খবর লে না


আপন ঘরের খবর লে না।
অনায়াসে দেখতে পাবি
            কোনখানে কার বারামখানা।।
কোমল ফোটা কারে বলি
কার মোকাম তার কোথায় গলি
কোন সময় পড়ে ফুলি
            মধু খায় সে অলি জনা।।
অন্য জ্ঞান যার সখ্য মোক্ষ
সাধক উপলক্ষ
অপরূপ তার বৃক্ষ
            দেখলে চক্ষের পাপ থাকে না।।
শুষ্ক নদীর শুষ্ক সরোবর
তিলে তিলে হয় গো সাঁতার
লালন কয়, কৃতি-কর্মার
            কি কারখানা।।

জলে গিয়াছিলাম সই


বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ, ২০১২

কোন মেস্তরি নাও বানাইলো এমন দেখা যায়


কোন মেস্তরি নাও বানাইলো এমন দেখা যায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।

চন্দ্র-সূর্য বান্ধা আছে নাওয়েরই আগায়
দূরবীনে দেখিয়া পথ মাঝি-মাল্লায় বায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।

রঙ-বেরঙের যতো নৌকা ভবের তলায় আয়
রঙ-বেরঙের সারি গাইয়া ভাটি বাইয়া যায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।

জারি গায়ে ভাটি বায়ে করতাল বাজায়
মদন মাঝি বড়ই পাজি কতো নাও ডুবায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।

হারা-জিতা-ছুবের বেলা কার পানে কে চায়
পাছের মাঝি হাল ধরিয়ো ঈমানের বৈঠায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।

বাউল আব্দুল করিম বলে বুঝে উঠা দায়
কোথা হইতে আসে নৌকা কোথায় চলে যায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।


তুমি বিনে আকুল পরাণ


তুমি বিনে আকুল পরাণ
থাকতে চায় না ঘরে রে
সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে

আমি এই মিনতি করি রে
...এই মিনতি করি রে
সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে

সাগরে ভাসাইয়া কুল-মান
তোমারে সঁপিয়া দিলাম আমার
দেহ-মন-প্রাণ
সর্বস্ব ধন করিলাম দান
তোমার চরণের তরে
সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে

আমারে ছাড়িয়া যদি যাও
প্রতিজ্ঞা করিয়া বলো
আমার মাথা খাও
তুমি যদি আমায় কান্দাও
...তুমি যদি আমায় কান্দাও
তোমার কান্দন পরে রে
সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে

আমি এই মিনতি করি রে
এই মিনতি করি রে
সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে

কুল-মান গেলে ক্ষতি নাই আমার
তুমি বিনে প্রাণ বাঁচেনা
কি করিব আর?
তোমার প্রেম-সাগরে
প্রেম-সাগরে তোমার করিম যেন ডুবে মরে
সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে

আমি এই মিনতি করি রে
এই মিনতি করি রে
সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে


কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু


কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু
ছেড়ে যাইবা যদি
কেমনে রাখবি তোর মন
কেমনে রাখবি তোর মন
আমার আপন ঘরে বাধিরে বন্ধু
—- ছেড়ে যাইবা যদি

পাড়া পড়শী বাদী আমার
বাদী কাল ননদী
মরম জ্বালা সইতে নারি
দিবা নিশি কাঁদিরে বন্ধু
—- ছেড়ে যাইবা যদি

কারে কী বলিব আমি
নিজেই অপরাধী
কেঁদে কেঁদে চোখের জলে
কেঁদে কেঁদে চোখের জলে
বহাইলাম নদী রে বন্ধু
—- ছেড়ে যাইবা যদি

পাগল আব্দুল করিম বলে
হলো এ কী ব্যাধি
তুমি বিনে এ ভুবনে
তুমি বিনে এ ভুবনে
কে আছে আছে ঔষধি রে বন্ধু
—- ছেড়ে যাইবা যদি

গান গাই আমার মনরে বুঝাই


গান গাই আমার মনরে বুঝাই
মন থাকে পাগলপারা
আর কিছু চায়না মনে গান ছাড়া ।।

গানে বন্ধুরে ডাকি গানে প্রেমের ছবি আঁকি
পাব বলে আশা রাখি না পাইলে যাব মারা
আর কিছু চায়না মনে গান ছাড়া ।।

গান আমার জপমালা গানে খুলে প্রেমের তালা
প্রাণ বন্ধু চিকন কালা অন্তরে দেয় ইশারা
আর কিছু চায়না মনে গান ছাড়া ।।

ভাবে করিম দ্বীনহীন আসবে কি আর শুভদিন
জল ছাড়া কি বাঁচিবে মীন ডুবলে কি ভাসে মরা
আর কিছু চায়না মনে গান ছাড়া ।।

আগের বাহাদুরি এখন গেল কই


আগের বাহাদুরি এখন গেল কই
চলিতে চরণ চলেনা দিনে দিনে অবশ হই
আগের বাহাদুরি এখন গেল কই ।।

মাথায় চুল পাকিতেছে মুখের দাঁত নড়ে গেছে
চোখের জ্যোতি কমেছে মনে ভাবি চশমা লই।।
মন চলেনা রঙ তামাশায় আলস্য এসেছে দেহায়
কথা বলতে ভুল পড়ে যায় মধ্যে মধ্যে আটক হই
আগের বাহাদুরি এখন গেল কই ।।

কমিতেছি তিলে তিলে ছেলেরা মুরুব্বী বলে
ভবের জনম গেল বিফলে এখন সেই ভাবনায় রই
আগের মত খাওয়া যায়না বেশি খাইলে হজম হয়না
আগের মত কথা কয়না নাচেনা রঙের বারুই
আগের বাহাদুরি এখন গেল কই ।।

ছেলেবেলা ভাল ছিলাম বড় হয়ে দায় ঠেকিলাম
সময়ের মূল্য না দিলাম তাইতো জবাবদিহি হই
যা হবার তা হয়ে গেছে আব্দুল করিম ভাবিতেছে
এমন একদিন সামনে আছে একেবারে করবে সই
আগের বাহাদুরি এখন গেল কই ।।

দুঃখে গেল কাল


তোরা শোন গো নিরব


কৃষ্ণ আমার আঙিনাতে আইতে মানা করি


কৃষ্ণ আমার আঙিনাতে আইতে মানা করি।
মান ছাড় কিশোরী।
যাও যাও রসরাজ, এইখানে নাহি কাজ
যাওগি তোমার চন্দ্রাবলীর বাড়ি।
চন্দ্রাবলীর বাসরেতে সারারাত পোহাইলার রঙ্গে
এখন বুঝি আইছ আমার মন রাখিবারে।
ভাবিয়া রাধারমণ বলে দয়ানি করিবে মোরে
কেওড় খোলো রাধিকা সুন্দরী।

মান ভাঙ রাই কমলিনি চাও গো নয়ন তুলিয়া


মান ভাঙ রাই কমলিনি চাও গো নয়ন তুলিয়া
কিঞ্চিত দোষের দোষী আমি চন্দ্রার কুঞ্জে গিয়া।
এক দিবসে রঙে ঢঙে গেছলাম রাধার কুঞ্জে
সেই কথাটি হাসি হাসি কইলাম তোমার কাছে।
আরেক দিবস গিয়া খাইলাম চিড়া পানের বিড়া
আর যদি যাই চন্দ্রার কুঞ্জে দেওগো মাথার কিরা।
হস্তবুলি মাথে গো দিলাম তবু যদি না মান
আর কতদিন গেছি গো রাধে সাক্ষী প্রমাণ আন।
নিক্তি আন ওজন কর দন্দলে বসাইয়া
অল্প বয়সের বন্ধু তুমি মাতি না ডরাইয়া।
ভাইরে রাধামরণ বলে মনেতে ভাবিয়া
আইজ অবধি কৃষ্ণনাম দিলাম গো ছাড়িয়া।

শ্যামল বরণ রূপে মন নিল হরিয়া


শ্যামল বরণ রূপে মন নিল হরিয়া
কুক্ষণে গো গিয়াছিলাম জলের লাগিয়া
কারো নিষেধ না মানিয়া সখি গো ।।
আবার আমি জলে যাব ভরা জল ফেলিয়া
জল লইয়া গৃহে আইলাম প্রাণটি বান্ধা থুইয়া
আইলাম শুধু দেহ লইয়া সখি গো ।।
কি বলব সই রূপের কথা শোন মন দিয়া
বিজলি চটকের মতো সে যে রইয়াছে দাঁড়াইয়া
আমার বাঁকা শ্যাম কালিয়া সখি গো ।।
ভাইবে রাধারমণ বলে মনেতে ভাবিয়া
মনে লয় তার সঙ্গে যাইতাম ঘরের বাহির হইয়া
আমি না আসব ফিরিয়া সখি গো ।।

প্রাণ সখিরে ঐ শোন কদম্বতলে বাঁশি বাজায় কে



প্রাণ সখিরে
ঐ শোন কদম্বতলে বাঁশি বাজায় কে।
বাঁশি বাজায় কে রে সখি, বাঁশি বাজায় কে ॥
এগো নাম ধরিয়া বাজায় বাঁশি, তারে আনিয়া দে।
অষ্ট আঙ্গুল বাঁশের বাঁশি, মধ্যে মধ্যে ছেদা
নাম ধরিয়া বাজায় বাঁশি, কলঙ্কিনী রাধা ॥
কোন বা ঝাড়ের বাঁশের বাঁশি, ঝাড়ের লাগাল পাই।
জড়ে পেড়ে উগরাইয়া, সায়রে ভাসাই ॥
ভাইবে রাধারমণ বলে, শুন গো ধনি রাই।
জলে গেলে হবে দেখা, ঠাকুর কানাই ॥

বিনয় করি গো প্রিয় আয় আয় রে


বিনয় করি গো প্রিয় আয় আয় রে
বিচ্ছেদের অনলে সদাই অঙ্গ জ্বলে
বিনয় করি গো প্রিয় আয় আয় রে

তোমারও তাড়না শরীরে সহে না
সহজ অবলা এ মন
বন্ধু বন্ধু বলে ঝাঁপিবো ঐ জলে
বিনয় করি গো প্রিয় আয় আয় রে

আগে না জানিয়া প্রেমেতে মজিয়া
কাঁন্দিয়া জনমও গেলো
দিয়া প্রেমের জ্বালা
হারাইলো এই বেলা
কোথায় লুকাইলি প্রিয় আয় আয়রে
বিনয় করি গো প্রিয় আয় আয় রে

শ্যামকালিয়া সোনা বন্ধুরে


শ্যামকালিয়া সোনা বন্ধুরে, ও বন্ধু
নিরলে তোমারে পাইলাম না, বন্ধু নিরলে তোমারে পাইলাম না।

ওই আমার মনে যত দুখঃ ছিলরে, বন্ধু
খুলিয়া কইলাম নারে বন্ধুরে, বন্ধু নিরলে তোমারে পাইলাম না,
শ্যামকালিয়া সোনা বন্ধুরে,
নিরলে তোমারে পাইলাম না, বন্ধু নিরলে তোমারে পাইলাম না।

ফুলের আসন ফুলের বসনরে,
আরে ও বন্ধু ফুলেরই বিছানা॥
হৃদকমলে শোয়াচন্দন ছিটাইয়া দিলাম না,
ও তোমার  হৃদকমলে শোয়াচন্দন ছিটাইয়া দিলাম না।
শ্যামকালিয়া সোনা বন্ধুরে,
নিরলে তোমারে পাইলাম না, বন্ধু নিরলে তোমারে পাইলাম না।

ক্ষীর ক্ষীরিয়া মাখন ছানারে,
আরে ও বন্ধু রসের ও কমলা।।
দুইও হস্তে চান্দো মুখেরে বন্ধু তুলিয়া দিলাম নারে বন্ধু
ওই আমার দুইও হস্তে চান্দো মুখেরে বন্ধু তুলিয়া দিলাম নারে,
বন্ধু নিরলে তোমারে পাইলাম না।

ভাইবে রাধারমন বলেরে আরে ওবন্ধু
মনে যেই বাসনা।।
তোমারও প্রিরিতে আমাইরে ওবন্ধু নইররিশা কইরো না।
ওরে তোমারও প্রিরিতে আমাইরে ওবন্ধু নইররিশা কইরো না।।

ওই আমার মনে যত দুখঃ ছিলরে, বন্ধু
খুলিয়া কইলাম নারে বন্ধুরে, বন্ধু নিরলে তোমারে পাইলাম না,
শ্যামকালিয়া সোনা বন্ধুরে, ও বন্ধু
নিরলে তোমারে পাইলাম না, বন্ধু নিরলে তোমারে পাইলাম না।




পিরিতি বিষম জ্বালা, সয় না আমার গায়


পিরিতি বিষম জ্বালা, সয় না আমার গায়
কুল নিল গো শ্যামের বাঁশি প্রাণ নিল কালায় |
ঘরে বাইরে থাকে বন্ধু ওই পিরিতের দায়,
কুল নিল গো শ্যামের বাঁশি প্রাণ নিল কালায় |
কালা তো সামান্য নয়,রাধার মন ভুলায়,
কুল নিল গো শ্যামের বাঁশি প্রাণ নিল কালায় |
ভাইবে রাধারমণ বলে শোন গো ললিতায় ||
কুল নিল গো শ্যামের বাঁশি প্রাণ নিল কালায় | |

পিরিতি বিষম জ্বালা, সয় না আমার গায় 
কুল নিল | গো শ্যামের বাঁশি প্রাণ নিল কালায় | 

প্রাণ সখিরে


প্রাণ সখিরে
ঐ শোন কদম্ব তলে বংশী বাজায় কে
বংশী বাজায় কে রে সখী
বংশী বাজায় কে
আমার মাথার বেনী বদল দেব
তারে আইনা দে
যে পথ দিয়ে বাজায় বাঁশি
যে পথ দিয়ে যায়
সোনার নুপূর পরে পায়
আমার নাকের বেতর খুইলা দেব
সেই না পথের দায়
আমার গলার হার ছড়িয়ে দেব
সেই না পথের দায়
যদি হার জড়িয়ে পড়ে পায়
যার
জানিস যদি বল
সখি করিস নাকো ছল
আমার মন বড় চঞ্চল
আমার প্রাণ বলে তার বাতি গানে
আমার চোখের জল
আমার মন বলে তার বাতি গানে
আমার চোখের জল
সরলা মাঠের _
নাম ধরিয়া বাজায় বাঁশি
রহনও না যায়
ঘরে রহনও না যায়


Add